পি টিভি নিউজ ডেস্ক : দেশে প্রথমবারের মত এয়ারপোর্ট রানওয়ের বিটুমিনে সড়কপথ নির্মাণ করা হবে। এবারের বাজেটে বরাদ্দ পাওয়া ঢাকা-সিলেট চার লেন হবে রানওয়ের এই বিশেষ বিটুমিনে। আগামী জুলাই মাসে চার লেন উন্নীতকরণ প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) তৈরি হবে। এরপর মন্ত্রিসভা অনুমোদন তারপর একনেকে পাশ। এ প্রক্রিয়া শেষ করতে এ বছরের পুরোটাই লেগে যেতে পারে। সড়কের দৃশ্যমান কাজ শরু হবে আগামী বছর ২০২১ সালের প্রথমদিকে। আর এটি হবে বাংলাদেশের দ্বিতীয় কোন সড়ক যেখানে চার লেনের দুই পাশে দুটি সার্ভিস লেন থাকবে।
সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য ও পরারাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘সওজ কর্মকর্তারা শুধু আশা করেন। কিন্তু আমরা কাজ আর শুরু হতে দেখি না। প্রকৌশলীর বললেন- এটা মডেল রোড হবে। কিন্তু মডেল রোড আর হতে দেখছি না। পাবলিকের হয়রানি হচ্ছে, ক্রমাগত এক্সিডেন্ট হচ্ছে। কিন্তু কাজ আর অগ্রসর হয় না। সব গল্প শুনছি যে এটা একটা আন্তর্জাতিক দর্শনীয় রাস্তা হবে। ওই খুশিতেই আছি এখনও । আমরা চাই কাজটা শুরু হোক। মানুষের দুর্গতি কমুক। ৭ ঘণ্টার পরিবর্তে ৩ থেকে সাড়ে ৩ ঘণ্টায় যেন যেতে পারি।’
গত সপ্তাহে প্রকল্পের খোঁজ নিতে সড়ক কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চেয়েছিলেন মন্ত্রী। সে কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘ডিজাইন এবং ফান্ডিং একসঙ্গে হচ্ছে। সওজ কর্মকর্তারা জুলাইয়ের মধ্যে ফান্ডিং এবং ডিপিপি সম্পন্ন করে সেপ্টেম্বর থেকে ভালো খবরের আশা করেন।’
তারপরও খানিক ক্ষোভ প্রকাশ করে সিলেট-১ আসনের এই জনপ্রতিনিধি বলেন, ‘তারা সবসময় আশা করেন কিন্তু অগ্রসর হয় না। সবশেষ তারা জানালেন আগামী জুলাই মাসের মধ্যে আশা করছেন ফান্ডিং এবং ডিজাইনটা চূড়ান্ত করে ফেলবেন। কবে শুরু হবে আমি বলতে পারব না।’
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর জানায়,ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দূরত্ব ২২৬ কিলোমিটার। চার লেনে দূরত্ব আরও কমিয়ে ২০৮ থেকে ২১০ কিলোমিটারে আনা হবে। এতে বর্তমান দূরত্ব থেকে অন্তত ১৫ কিলোমিটার কমে যাবে। এখন যেতে লাগে ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা। চার লেনে লাগবে সাড়ে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা। যানবাহন চলবে ৮০ থেকে ১২০ কিলোমিটার গতিতে। সম্ভাব্য প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে এই চার লেন নির্মাণে। ডিপিপি প্রণয়নের কাজ প্রায় চূড়ান্ত। তারপর মন্ত্রণালয় হয়ে একনেকে অনুমোদনের পর কাজ শুরু হবে। ২০২১-এ শুরু হলে শেষ হবে তিন বছরে অর্থাৎ ২০২৩ সালের শেষে।
সওজ-এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (প্রকিউরমেন্ট ) মোহাম্মদ সাব্বির হাসান খান জানান, ডিজাইন রিভিউ মোটামোটি চূড়ান্ত পর্যায়ে। জুলাইয়ের মধ্যে ডিপিপি জমা দেওয়া যাবে। বাংলাদেশে প্রথম এই চার লেন নির্মাণে ‘পলিমার মডিফায়েড বিটুমিন’ব্যবহার করা হবে। বিমানবন্দরের রানওয়েতে এই বিটুমিন ব্যবহার করা যায়।
ভারী যানবাহনের লোড নিতে সক্ষম এবং টেকসই আকারে সড়ক নির্মাণ এই বিশেষ বিটুমিনের ব্যবহার হবে ঢাকা সিলেট চার লেনে প্রকল্পে- জানান প্রকৌশলী মোহাম্মদ সাব্বির হাসান খান।
সওজ সূত্র জানায়, জুলাইয়ে ডিপিপি চূড়ান্ত হলেও তারপরও এটি অনুমোদন একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। প্রকল্প সড়ক ভবন থেকে মন্ত্রণালয়ে জমা পড়ে। এরপর মন্ত্রণালয়ে এটি যাচাই-বাছাই হবে। তারপর পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়। সেখান থেকে একনেক ওঠে। করোনার মধ্যে এই ধাপগুলো শেষ হতে ঠিক কত সময় লাগবে সে বিষয়ে এখনও সঠিক ধারণা পাওয়া যায়নি।
তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (প্রকিউরমেন্ট ) মোহাম্মদ সাব্বির হাসান খান আশা জানিয়ে বলেন, ‘যেহেতু এটি ফ্রাস্ট ট্রাক প্রকল্পের মতো গুরুত্ব পাচ্ছে সে কারণে ধাপগুলো খুব দ্রুত এগিয়ে যাবে। এই সময়ের মধ্যে একইসঙ্গে ঠিকাদার নিয়োগের কাজও চলবে।’
সওজ সংশ্লিষ্ট বিভাগ জানায়, ঢাকা সিলেট চার লেন সড়ক হবে দূরত্ব প্রায় ২০৮ থেকে ২১০ কিলোমিটারের মধ্যে হবে। পথে ৬টি রেলওয়ে ওভারপাস (ফ্লাইওভার) করা হবে।
তথ্য সূত্র:সারাবাংলা
Leave a Reply