♥♥
নীল টিপের হাত ধরে লিফট্ এ নিয়ে যায়,,,, লিফট্ চলার সাথে সাথেই টিপ নীলকে আস্টে পিস্টে জরীয়ে ধরে,
টিপ: আমি যদি এখন এখানে আটকে যাই তখন কি হবে হ্যা,
নীল: আরে আটকে যাবে কেনো, আর লাফাচ্ছো কেনো? তাও আমায় জরীয়ে, আমার ঘাড় টা তো এক্ষনি ভেঙে যাবে,
টিপ: যাবে যাক, আপনি আমায় জোর করে কেনো এখানে আনলেন হ্যা? এখন এটা যদি ভেঙে পড়ে যায় তখন কি হবে আমার হ্যা?
নীল: হুম তা ঠিক তোমার জা ওয়েট,
টিপ: কিহ্ আমি মোটা?
নীল: আমি কখন বললাম?
টিপ : একদম কথা ঘোরাবেন না, আপনি এই মাত্র বললেন আমি মোটা,
নীল: আচ্ছা বলেছিলাম হয়তো,
টিপ: ইয়া খোদা, এটা এতো কাপছে কেনো? আমার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে, কেমন জানি লাগছে, আমি বাহিরে যাবো, আমি তো মরেই যাবো এখন,
টিপ কথাটা বলার সাথে সাথেই নীল টিপকে জড়িয়ে ধরে টিপের মাথাটা নিজের বুকের সাথে জড়িয়ে নেয়,
নীল: শক্ত করে জড়িয়ে ধরো আমায়,( টিপ নীলকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে) রিল্যাক্স, কিচ্ছু হবেনা, আমি আছি তো, চোখ বন্ধ করে নাও,
টিপ: হুম, আচ্ছা,
টিপ নীলের বুকে মাথা রেখে নীলকে শক্ত করে জড়িয়ে আছে, নীল ও টিপকে জড়িয়ে আছে, টিপের এ অবস্থা দেখে নীল মুচকি মুচকি হাসছে,
টিপ: আর কতক্ষন লাগবে?
নীল: কেনো এভাবে থাকতে খারাপ লাগছে?
টিপ: খুবই ভালো লাগছে, না মানে, হ্যা খুবই খারাপ লাগছে, একদম অসহ্য,
নীল: তাই?
টিপ: হ্যা,
নীল: অলরেডি দু বার নিচে গেছি আবার উপরে আসছি, তুমি তো টেরই পাওনি, এটা খারাপ লাগার লক্ষন?
টিপ: কিহ্ দু বার? আমায় আগে বলেন নি কেনো, আমি না হয় বুঝতে পারিনি, তাই বলে আপনি আমায় বলবেন না?
নীল:কেনো বলবো?
টিপ: কেনো বলবেন না?
নীল: আমার ইচ্ছা,
টিপ: ইয়া খোদা আপনার এত্ত ইচ্ছা কেনো হয়, ছাড়ুন আমায়,
নীল: ছেড়ে দিবো,?
টিপ: না,
নীল: আচ্ছা ঠিক আছে, এতো রিকুয়েস্ট করছো যখন জড়িয়ে ধরার জন্য তখন আমি কি করে ছেড়ে দেই,
টিপ: একদম এডভান্টেজ নেবার চেষ্টা করবেন না আমি কিন্তুু চিল্লাবো,
নীল: আচ্ছা,,,,,তাই?
টিপ: হ্যা, না, মানে আমি,
নীল: পৌছে গেছি,
টিপ তাড়াতাড়ি নীল কে ছেড়ে দিয়ে বের হয়ে আসে,
টিপ: ইয়া খোদা তুমি আমায় নিজের হাতে বাচিয়ে দিয়েছো, উফ্,
নীল টিপের কথা শুনে টিপের সামনে দাড়ায়,
নীল: ইয়া খোদা তুমি আমাকেও আজ নিজের হাতে বাচিয়ে দিয়েছো, না হলে কখন আমার ঘাড় টা ভেঙে যেতো,
নীলের কথা শুনে টিপ ভ্রু কুচকে নীলের দিকে তাকায়, নীল একটা মুচকি হেসে নিজের কেবিনে চলে আসে,
টিপ: ( ভাগ্য ভালো আপনার তাই ঘাড় টা ভেঙে যায় নি, এখন তো ইচ্ছে করছে দৌড়ে গিয়ে ঘাড় টা ভেঙে দিয়ে আসতে, খচ্চর ছেলে একটা, কাল থেকে আমার কলিজা টা টেনেই চলেছে, নেহাৎ আমি নয়তো অন্য কেউ হলে পিটিয়ে বেগুন ভর্তা বানিয়ে দিতো, হুহ্, আমি অন্য একটা চাকরি খুজে নিবো,আর কাজ করবোনা এখানে, নেহাৎ আকাশ আমায় বললো, আকাশ! ওহহহ ওর সাথে তো দুদিন কথাই হয় নাই, ফোন টা কই আমার)
নীল: নীল আকাশ কে?
টিপ: আপনি জানলেন কি করে?
নীল: তোমার ফোনটা আমার কাছে আর নীল আকাশ নামে কেউ তখন থেকে ফোন করছে,
টিপ: ওহ্ তখন থেকে খুজতেছি দিন,
নীল: নীল আকাশ কে?
টিপ: আমার ফেসবুক বন্ধু খুব ভালো,
নীল: ফেসবুক বন্ধু তো ফোনে কথা হয় কেনো?
টিপ: সেটা আমার ব্যাক্তিগত ব্যাপার অফিসে কাজ ছাড়া ব্যাক্তিগত কথা বলা আমার মনে হয় উচিৎ না,
নীল কিছু না বলে ফোন টিপের কাছে দিয়ে চলে গেলো, টিপ ফোন নিয়ে আকাশের কাছে ফোন দেয়, আকাশ টিপের ফেসবুক বন্ধু, বিগত তিন বছর যাবৎ টিপ আকাশের সাথে কথা বলে বন্ধুর মতো, কিন্তুু ওরা একে অপরকে কোনোদিন দেখে নি, ওদের বন্ধুত্ব ফোনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ, নীলের
এখানে পোস্ট ফাকা আছে আর এখানে কাজ এর কথাটা আকাশই টিপকে জানায়, টিপ কখনও আকাশকে নিজের পরিবার সম্পর্কে কিছু জানায়নি, তার পরেও টিপ যে মেন্টালি প্রবলেম এ থাকে এটা আকাশ বুঝতে পারে,
টিপ: কেমন আছেন?
আকাশ: ভালো কি করে থাকি, কাল থেকে আপনার কোনো খোজ নাই,
টিপ: আসলে কাজ নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম তাই,
আকাশ: কাজ নিয়ে নাকি অন্য কিছু?
টিপ: না, কাজ নিয়েই তো,
আকাশ: বিশ্বাস হলো না,
টিপ: আচ্ছা আপনি আমার না বলা কথা বুঝেন কি করে?
আকাশ: বুঝতে হয়, আপনি তো পারেন না,
টিপ: হুম, আসলে,
এর মধ্যে নীল এসে টিপ এর ফোন টা নিয়ে নেয়,
টিপ: আরে, কথা বলছিলাম তো,
নীল: এটা অফিস, কাজের জায়গা, আর কাজের জায়গায় ব্যাক্তিগত কথা বলা ঠিক না, তাই না?
টিপ?: আপনি,
নীল: এই ফাইল গুলো রেডি করে আমার কেবিনে দিয়ে এসো,
টিপ: আমার ফোন,
নীল: কাজ শেষ হলে পাবে বলে নীল চলে গেলো,
টিপ: রাক্ষস একটা, কলাখেকো হনুমান, মুখপোড়া বানর,
টিপ কাজ করতে বসে পড়ে,
এদিকে নীল টিপের ফোনটা এনে নিজের চেয়ারে বসে হাসতে থাকে,
দাদি: কি ব্যাপার আমার দাদুভাই টা আজ নিজে নিজে হাসছে, ব্যাপারটা কি?
নীল: দাদি তুমি? কখন এলে, আমায় বললে তো পারতে, আমি চলে যেতাম,
দাদি: আমি আসলাম, আজ তো টিপের বিয়ে কিছু গিফ্ট কিনতে হবে তো,
নীল: বিয়ে টা হচ্ছে না দাদি,
দাদি: কেনো? কি হয়েছে? পাত্রপক্ষ না করে দিয়েছে,? নাকি টিপকে পছন্দ হয়,নি?
নীল: কি যে বলো দাদি? টিপকে কি কেউ অপছন্দ করতে পারে?
দাদি: তাই, কেউ পারেনা?
নীল: কেউ না,
দাদি: তুই ও না?
নীল: আমি ও না,
দাদি: আচ্ছা,
নীল: না, মানে
দাদি: আচ্ছা থাক, তাহলে আমি বাসায় যাই, তোর বাবা ফোন করেছিলো কাল,
নীল: ওহ্,
দাদি: কি বললো শুনবি না?
নীল: আমি শুনে কি করবো?
দাদি: বাবা তোর ও,
নীল: তোমার ছেলের কি এটা মনে আছে যে আমিও উনার একটা ছেলে? মনে আছে আমার ও কষ্ট হয়, আমার ও ইচ্ছে হয় উনার ভালোবাসা পাবার, খোজ নেয় আমার একটা বারও আমি কেমন আছি? বেচে আছি না মরে গেছি? আম্মু মারা যাবার পর আমি কি করে বেচে আছি, কি করে আমি একা নিজেকে তৈরি করেছি, কি ভাবে নিজের কষ্টকে নিজের মনে লুকিয়ে রেখেছি যানে কেউ বলো?
দাদি: ওরা তো তোকেও ওদের সাথে নিয়ে যেতে চেয়েছিলো,
নীল: কেনো যাবো আমি বলো, আমার আম্মুকে রেখে আমি কি করে চলে যেতাম, আমি খালার কথা বাদ দিলাম কিন্তুু বাবা উনি কি করে আমার কথা ভুলে গেলো? শোনো দাদি আমার কারো ওপর কোনো রাগ নাই দাদি আমি আমার মতো থাকতে চাই,
দাদি: তোর রাগ করাটা স্বাভাবিক নীল কিন্তুু যতই হোক উনি তো তোর বাবা, আগামী মাস এ সবাই দেশে আসছে,
নীল: ভালো কথা তো আমি কি করবো? দেখো দাদি তোমার ছেলে তোমার কাছে আসছে,
আমাকে এর মধ্যে টানবে না, আমাকে আমার মতো থাকতে দাও,
দাদি: নীল তুই?
নীল: তুমি যাও দাদি প্লিজ,
নীলের দাদি মন খারাপ করে বের হয়ে চলে আসে, আসার সময় টিপকে দেখে দরজার বাহিরে দাড়িয়ে থাকতে, দাদি টিপকে কিছু না বলে বের হয়ে যায়, টিপ বাহিরে দাড়িয়ে নীলের সব কথা শুনতে পায়, টিপ ভেতরে ঢুকবে কি ঢুকবেনা দাড়িয়ে ভাবছে, তখনই নীল দরজা খুলে টিপের সামনে দাড়ায়, টিপ চুপ করে নীলের দিকে এক পলক তাকিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে থাকে,
নীল: কিছু বলবে?
টিপ: হুম আসলে,
নীল: কি বলো?
টিপ: এই ফাইল টার কিচ্ছু বুঝতে পারছি না,
নীল: ভেতরে এসো,
টিপ ভেতরে ঢুকতে যাবে তার আগেই কেউ টিপের হাত ধরে হনহন করে টেনে নিয়ে ছাদে নিয়ে চলে যায়,
টিপ তাকিয়ে দেখে সে আর কেউ নয় রাজু,
টিপ: আপনার সাহস তো কম নয় আমাকে হাত ধরে এভাবে এখানে নিয়ে আসলেন,
রাজু: i am sorry টিপ, বাট আমার করার কিছু ছিলো না, তুমি আমার সাথে আসতে না,
টিপ: কেনো আসবো আমি? আমি আপনার সাথে কোনো কথা বলতে চাই না, আমাকে যেতে দিন,
রাজু: সেদিনের জন্য সরি টিপ, প্লিজ মাফ করে দাও আমায়, সেদিন যা হয়েছে সবটাই মিসটেক, আমার কথাটা সুনবে তো,
টিপ: প্লিজ, আমি সব বুঝতে পারছি, আমায় সরি বলতে হবে না, প্লিজ আমায় যেতে দিন,
টিপ চলে আসতে গেলে রাজু টিপের হাত ধরে টেনে টিপের দুই বাহু চেপে ধরে,
রাজু: কিসের এতো দেমাগ তোমার হ্যা? কিসের এতো ভাব, আমার ইগো হার্ড করছো তুমি, এতো সহজে তোমায় ছাড়ছি না, বিয়ে করবো তোমায় আমি, জোর করেই করবো, দেখে নিবো তোমার এতো কিসের অহংকার,
তখনই ঠাসসসসস্ করে একটা জোরে আওয়াজ হয়,
রাজু মুখ তুলে দেখে নীল দাড়িয়ে আছে, রাজু তাড়াতাড়ি টিপকে ছেড়ে দেয়, রাজুর এমন আচরনে খুব ভয় পেয়ে যায়,কারন এমন একটা অতীত টিপের জীবনে একবার ঘটে গেছে,
রাজু: নীল কাজটা তুই মোটেই ভালো করলি না, তুই এই মেয়েটার জন্য আমার গায়ে হাত তুললি?
কথাটা বলার সাথে সাথেই আরেকটা চড় মারে নীল রাজুকে, তার পর দৌড়ে রাজুর কলার চেপে ধরে,
নীল: তোর সাহস কি করে হয় ওকে টাচ করার, ওর অনুমতি ছাড়া ওর সাথে কথা বলার, ওকে এই সমস্ত কথা বলার, সাহস কি করে হয় হ্যা?
রাজু: নীল তুই,,,,
নীল: আর একটা কথা বললে আস্ত ফিরে যেতে পারবি না বলে দিচ্ছি,
রাজু : আচ্ছা আমি কি চুড়ি পরে আছি নাকি? কে ও সামান্য ২ টাকার একটা মেয়ে, ওর জন্য তুই আমার সাথে এই ব্যবহার করলি? আমাদের বন্ধুত্ব নষ্ট করলি কে ও?
নীল: ও আমার.
রাজু: হ্যা বল তোর কে? কে ও বল কে ও?
নীল: ভালোবাসি আমি ওকে,
রাজু: হাহাহাহা আমি সব জানি,
নীল: তুই?
রাজু: আরে ব্যাটা আমি জানি তুই ওকে ভালোবাসিস,
টিপ: আপনি যেনে বুঝে,আমার সাথে এরকম করছেন?
রাজু: আমি সরি টিপ, আই মিন ভাবি, আসলে এই ব্যাটা কিছুতেই আমার কাছে স্বীকার করতো না যে ও আপনাকে ভালোবাসে, কিন্তুু ভাই এতো জোরে কেউ চড় মারে, আমার মুখের তো বারোটা বাজিয়ে দিয়েছিস, এখন তো কোনো মেয়েই আমার দিকে তাকাবে না,
নীল: কাজটা তুই মোটেই ভালো করিস নাই,
টিপ কিছু না বলে নিচে চলে যায়,
রাজু: ভাবি, ভাবি, কই যাচ্ছেন? আরে তুই আমার দিকে এভাবে তাকাচ্ছিস কেনো? আমি কাউকে কিচ্ছু বলি নাই, একটা ট্রিট না দিলে বলে দিতেও পারি,
নীল: ঠাস করে চড় মারতে হয় তোরে,
রাজু: দুইটা তো মেরেছিস আর কয়টা মারবি?
নীল: সরি দোস্ত,
রাজু: আরে ব্যাটা সরি বলতে হবে না, আমি সেদিন চড় টা খাবার পরেই বুঝতে পেরেছি তুই ওকে ভালোবাসিস, তোর মুখ থেকে শোনার জন্যই,
নীল: টিপকে তুই ভালোবাসিস না?
রাজু: ওকে কেউ ভালোনাবেসে থাকতে পারবে না, আই লাভ হার, বাট এখন ভাবি, বন্ধুত্বর থেকে ভালোবাসা বড় নয়, কিন্তুু সবাই তো আমায় ভিলেন ভেবে নিয়েছে, মজা করতে গিয়ে দুটা চড় খেতে হলো,
নীল: হাহাহাহাহা করবি এ রকম মজা বল,
রাজু তোর জন্য হাজার বার ও করতে পারি,
নীল: শালা, তুই ভালো হবি না,
রাজু: আর হতেও চাই না,
রাজু অফিস থেকে চলে যায়, আর নীল টিপকে খুজতে লাগে, টিপকে পুরো অফিসে খুজে স্টোর রুমে পায়, টিপ ফ্লোরে বসে হাটুতে মাথা রেখে বসে কান্না করছে,
নীল: টিপ কি হয়েছে তোমার, তুমি ঠিক আছো তো, আসলে রাজু,
টিপ: ডোন্ট টাচ্ মি,
নীল: টিপ তুমি?
টিপ: আমি এ চাকরি টা আর করতে পারবো না,
নীল: কেনো?
টিপ: কারণ আমি নিজেকে আর ছোট করে এখানে কাজ করতে পারবো না, আমি আপনাকে চিনি না, যানি না, আপনার এ রকম বিহেব আমার একদম পছন্দ নয়, আমি আপনার লাইফে যেতে চাই না,আর আপনাকেও আমার লাইফ এ আসতে দিতে চাই না, আমি আমার মতো থাকতে চাই,
নীল: আমি তো তোমাকে জোর করছি না,
টিপ: আমি চাই না কোনোদিন করেন, আমি চাই না আমার আগে পিছে ঘুরেন, চাকরি আমার দরকার কিন্তুু আমার সম্মান টা আমার খুব মূল্যবান, এটা বিসর্জন দিয়ে আমি কাজ করতে পারবো না,
নীল: কি চাইছো তুমি?
টিপ: আমাকে ছেড়ে দিন, আমি কষ্ট করে টাকা উপার্জন করতে চাই, আমার সেলফ রিসপেক্ট আমি নিজে তৈরি করতে চাই, কারো দয়া নিয়ে আমি বাচতে চাই না, আপনার ভালোবাসা নামক জাল থেকে মুক্তি দিন আমায়,
নীল: খুসি হবে?
টিপ: হুম
নীল কিছুক্ষন কিছু একটা ভেবে একটু ভেবে টিপ এর দিকে তাকায়,
নীল: আচ্ছা ঠিক আছে তোমাকে চাকরি ছাড়তে হবে না, তুমি তোমার মতো থাকো, আর জোর করবো না তোমায়, ভালোবাসার অধিকার নিয়ে আসবো না, আমি বস, আর তুমি স্টাফ, ঠিক আছে, তুমি যাও, তোমার তো আজ বিয়ে, আজ ছুটি তোমার,
কথাটা বলেই নীল বের হয়ে চলে আসে, কথাটা শোনার সাথে সাথেই টিপের চোখে আবার পানি চলে আসে, কারন নিজের অজান্তেই টিপের মনে নীল একটা ছোট্ট জায়গা করে নিয়েছে, কিন্তুু টিপ কি বা করবে, ভালোবাসার পরিনাম যে কি সেটা ও একবার বুঝতে পেরেছে, নতুন করে সেটা জন্ম দিতে চায় না, টিপ উঠে বেরিয়ে পড়ে, নীল নিজের কেবিনে এসে বসে পড়ে
নীল: আমি জানি তুমি কিসের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছো, তোমার কষ্টটা ভাগ করে নিতে চাই, সারাজীবন পাশে থাকতে চাই তোমার, আমি চাই তুমিও আমায় সমানভাবে ভালোবাসো, আমার ভালোবাসাটা উপলব্ধি করে আমার কাছে আসো, আর জোর করবোনা তোমায়, ভালোবাসি তোমায়, আমার ভালোবাসার ওপর আস্থা আছে আমার, তুমি আমার কাছে ফিরে আসবেই, কারন তুমি শুধুই আমার টিপ (নীলটিপ)
টিপ বাসায় এসে দেখে সব কিছু নরমাল, বাড়িতে কোনো সাজগোজ নেই, টিপকে দেখে তার ফুপি তাড়াতাড়ি এগিয়ে আসে, ফুপির ওভাবে এগিয়ে আসা দেখে টিপ ভয় পেয়ে যায়, টিপ একটু পিছিয়ে যায়,
ফুপি: কি রে মা, তুই কাল থেকে কোথায় ছিলি? তোর টেনশনে আমার খাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে, দেখ আমার চোখের নিচে কালি পড়ে গেছে,
তিশ: থাক আজ অনেক ড্রামা হয়ে গেছে, আবার পরে স্টার্ট করো, আপুই তুই আয় আমার সাথে,
ফুপি: কই যাবে ও, খাবেনা ও? আয় মা খেয়ে নে, সারাদিন কই ছিলি? মুখটা শুকিয়ে গেছে, আয় আয় খেয়ে নে,
তিশা: আর কত আদিক্ষেতা দেখবো, আল্লাহ্
টিপ: না ফুপি আমি এখন খাবো না,
ফুপি: না, না আয় মা খেয়ে নে,
টিপের ফুপু জোর করে টিপকে টেবিলে বসিয়ে খাইয়ে দিতে লাগলো,টিপ কিছুই বুঝতে পারছে না সব কিছু অবাক লাগছে, একটা ঘোর এর মধ্যে আছে টিপ,
তিশা: টাকা কি না করতে পারে, আজ নীল ভাইয়ার জন্য আপু আবার সব কিছু ফিরে পাবে, ওর অধিকার ও ফিরে পাবে, এরকম ভাবেই একদিন আসিফ এসেছিলো আপুর জীবনে, কিন্তুু অভিশাপ হয়ে, আপুর জীবনে একটা কালো দাগ হয়ে আছে ও, আর আবার একজন এসেছে সেই দাগ ভালোবাসা দিয়ে মুছে ফেলতে, মানুষ কত রকমের হয়ে থাকে তাই না, আমি তোকে সুখী দেখতে চাই রে আপু, তোকে পারমানেন্টলি হ্যাপি দেখতে চাই, আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো নীল ভাইয়ার সাথে তোর মিল করিয়ে দিতে,
ফুপি: কি ভাবছিস ওতো? তিশা এখানে আয় আপুকে পানি দে,
টিপ: থাকনা আমি নিয়ে নিচ্ছি,
ফুপি: না তোর কিছু করতে হবে না, আজ থেকে তোর আর কিচ্ছু করতে হবে না, তুই আগে যেমন ছিলি তেমন থাকবি, কিন্তুু চাকরিটা করতে হবে, এখন যা রেস্ট নে,
তিশা টিপের হাত ধরে রুমে নিয়ে আসে,
টিপ: তিশা এসব কি হচ্ছেরে?
তিশা: আম্মুর ভুতের বাতাস লেগেছে তো তাই,
টিপ: ফাজলামু করিস না, কি হয়েছে বল,
তিশা: আমি কি করে জানবো? মনে কর না তোর ভাগ্য তোকে তোর সব ফিরিয়ে দিচ্ছে, আরে সব বাদ দে, তুই দৌড়ে দৌড়ে বিয়ে করতে এসেছিলি নাকি? আম্মু কি বলেছিলো? তুই বিয়ে না করলে আমাকে বিয়ে দিয়ে দিতো? আর তুই বিশ্বাস করে চলে এলি? বিয়ে টা বন্ধ করে দিয়েছি, কিন্তুু তুই এটা আমার কাছ থেকে লুকিয়ে আমায় কষ্ট দিয়েছিস,
টিপ: আমি তোকে কষ্ট দিতে চাইনি তিশা,
তিশা: অনেক হয়েছে, যা হচ্ছে হতে দে শুধু দেখে যা, এখন নিজেকে নিয়ে একটু ভাব,
টিপ: নিজেকে নিয়ে ভাবার কিছু নাই,
তিশা: কাল রাতে কই ছিলি?
টিপ: নীল এর সাথে,
তিশা: নীল কে?
টিপ: আমার বস,
তিশা: ওওওও আচ্ছা, নীল স্যার থেকে নীল?
টিপ: আমার অফিসে যেতে হবে,
তিশা: কেনো?
টিপ: আমার ফোনটা উনার কাছে আছে,
তিশা: উনি, টা কে?
টিপ: নীল স্যার,
তিশা: ও, আচ্ছা, স্যার?
টিপ: আমি আসছি,
টিপ বের হয়ে অফিসে চলে আসে, নীলের কেবিনে যেতেই কারো হাসির খুব আওয়াজ পায় টিপ, এতো হাসি টিপের কাছে ভালো মনে হয় না, নীল ও জোরে জোরে হেসে চলেছে, ভেতরে কি হচ্ছে দেখার জন্য টিপ এবার তাড়াহুড়ো করেই নক না করেই দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে পড়ে ভেতরে ঢুকেই টিপ ভ্রু কুচকে সামনের দিকে তাকিয়ে থাকে,
♥♥চলবে♥♥
Leave a Reply