লেখিকা:- মিসেস জুবায়ের।
এতিম কথাটা শোনার সাথে সাথেই নীল গিয়ে ঠাস করে টিপের গালে চড় মেরে দেয়, টিপ গিয়ে বিছানায় ধপ করে পড়ে যায়, নীল টিপের ওপর চিল্লিয়ে ওঠে,
নীল: কিসের এতিম তুই? মরে গেছি আমি? আর একবার যদি নিজেকে এতিম বলিস একদম মেরে ফেলবো তোকে,
টিপ গালে হাত দিয়ে চুপ করে বসে কান্না করতে থাকে,
নীল: আমি ওয়াসরুম থেকে বের হয়ে এসব যেনো এখানে না দেখি,
কথাটা বলেই নীল ঠাস করে দরজা লাগিয়ে ওয়াসরুমে চলে যায়, টিপ উঠে তাড়াতাড়ি করে সব তুলে গুছিয়ে রেখে দেয়, তখন নীল বের হয়, নীল বের হয়ে দেখে টিপ বেলকুনিতে দাড়িয়ে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাদছে, নীলের বুকের মধ্যে মোচড় দিয়ে ওঠে, নীল দেখলো টেবিলে খাবার সাজানো, নীল বুঝতে পারে টিপ ওর জন্য বসে আছে, নীল টিপের দিকে এগিয়ে যায়,
নীল: রুমের ভেতরে আসো,
টিপ: কোন কথা বলেনা শুনেও না শুনার ভান করে নিজের মতো দাড়িয়ে রয়,
নীল: আমি কি বললাম শোনো নি?
টিপ: এবারও আগের মতই দাড়িয়ে রয়, নীল আর কথা না বলে সোজা গিয়ে টিপকে কোলে তুলে নেয়,
টিপ: আরে,
নীল: চুপ, একটা কথা বললে বেলকুনি দিয়ে নিচে ফেলে দিবো,(ধমক দিয়ে)
টিপ নীলের ধমকানিতে চুপ হয়ে যায়, আর নীলের টিশার্ট মুঠো করে ধরে, যাতে নীল যদি সত্তি টিপকে ফেলে দিতে যায় তাহলে ফেলতে পারবে না,
নীল টিপকে এনে সোফায় বসিয়ে দেয়,
নীল: এখনও খাওনি কেনো তুমি
টিপ: আমার রুচি নেই,
নীল: খাবার রেডি করো খেয়ে নেই,
টিপ : বললামতো আমার রুচি নাই আপনি খেয়ে নিন, ওখানে সব রাখা আছে,
নীল: ঠিক আছে, সারাদিন ধরে তো কিছু খাইনাই আর খেতে ও হবে না,
নীল গিয়ে ধুপ করে বিছানায় শুয়ে পড়ে, নীলের কথা শুনে টিপ তাড়াতাড়ি খাবার রেডি করে বিছানার কাছে গিয়ে নীলকে ডাকতে শুরু করে,
টিপ: সারাদিন না খেয়ে আছেন কেনো?
নীল: ইচ্ছা হয়েছে তাই,
টিপ: উঠেন খেয়ে নিবেন, সব রেডি করেছি,
নীল: খুদা নাই, তুমি খেয়ে নাও,
কথাটা বলেই নীল কাঁথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়ে, এটা দেখে টিপ রেগে যায়, ধুম করে কাথাটা সরিয়ে নীলেরর টি শার্টের কলার ধরে নীলকে টেনে উঠে বসিয়ে দেয়, নীল টিপের দিকে তাকিয়ে আছে, টিপ ফুপিয়ে ফুপিয়ে নীলের সাথে কথা বলতে থাকে,
টিপ: কি, কি পেয়েছেন আপনি? সব আপনার ইচ্ছা মতো হবে? আমার কোনো মুল্য নাই আপনার কাছে?এতোটাই অমুল্য আমি আপনার কাছে? আমি বুঝতে পারছি সেদিন জোর করে আপনাকে বিয়ে করাটা আমার ঠিক হয়নি, আপনার মনে অন্য কেউ, নীল ঝট করে টিপকে ধরে বিছানায় ফেলে দিয়ে টিপের হাত দুটো বিছানায় শক্ত করে মুঠো করে দাঁতে দাঁত চিপে রাগি লুকে টিপের দিকে তাকায়,
নীল: অন্য কেউ, অন্য কেউ কি?খুব সাহস বেড়েছে তাই না? আমি ভালোবেসে রাখতে চাচ্ছি তোমার পছন্দ হচ্ছে না? তাই না? তুমি জানো আমার জীবনে তোমার জায়গা টা কোথায়? বোঝার চেষ্টা করেছো কখনও আমায়, নিজে যা বঝো তাই করো, (দাঁতে দাঁত চিপে
টিপ: লাগছে আমার,
নীল: লাগছে? কেনো আমার লাগে না? কাল আমার বুকে কতবড় আঘাত করেছো তুমি কোনো ধারনা আছে তোমার? জ্যান্ত মেরে ফেলতে গেছিলে আমায়,, কাল তোমার কিছু হলে আমার কি হতো হ্যা?
টিপ: আমি তো,
নীল: চুপ একটা কথা না, আমি না হয় কাল রেগে একটা চড় মেরেছি, তো? তোমাকে মারার অধিকার আছে আমার, কি আছে তো তাই নয় কি?
টিপ: হু, হুম ( ভয়ে মাথা ঝাকিয়ে)
নীল: তো তুমি তো বুঝলে আমি রেগে তোমায় মেরেছি, তো আমার রাগ না ভাঙিয়ে তুমি উল্টা পাল্টা চিন্তা করে আমার থেকে দুরে যাবার চেষ্টা করছো কোন সাহসে? কোন সাহসে কাল বেলকুনিতে গিয়েছিলে ঘুমাতে? আবার আজ নিজেকে এতিম বলছো? কোন সাহসে আমার থেকে দুরে থাকার চেষ্টা করছো?
টিপ: আসলে,
নীল: চুপ, একদম চুপ, আমি নীল যতদিন বেচে আছি তোমার কারো পরোয়া করতে হবে না, তোমার মা-বাবা, গার্জিয়ান সব আমি, তোমার পৃথিবী আমি, আমি থাকতে তোমার গায়ে কাঁটার আঁচড় কেউ দিতে পারবে না, আবার ফের কোনোদিন যদি এ ধরনের কথা আমার সামনে মুখে এনেছেন তো মিসেস নীল আপনার যে কি অবস্থা করবো আমি আপনি চিন্তা ও করতে পারবেন না,
টিপ: তাই, কি করবে?
নীল: আর একটা কথা, আমার ওপর অধিকার টা শুধু তোমার, অন্য কারো না, এখন তাড়াতাড়ি উঠে আমায় খাইয়ে দিন, আর সাথে আপনি ও খাবেন ঠিক আছে?
টিপ: (মাথা ঝুকিয়ে হ্যা বলে) নীল টিপকে ছেড়ে দিয়ে বিছানায় বসে পড়ে, টিপ গিয়ে সোফায় বসে পড়ে খাবারের প্লেট হাতে নেয়, আর নীল গিয়ে সোফায় বসে টিপের কমর টেনে নিজের কোলে বসিয়ে টিপকে আলতো করে জড়ীয়ে ধরে,
নীল: সরি বউ, নীল এর একটু ভালোবাসায় টিপ আবার ফুপিয়ে কান্না করতে শুরু করে,
নীল: তুমি এভাবে কাদছো কেন?
টিপ: এতো জোরে জোরে চড়, বকা, এক, দিন খেয়ে দেখেন, কান্না আসে কি না, নীল টিপকে টেনে বুকের মধ্যে জড়ীয়ে নেয়, টিপ আরও জোরে জোরে কাদতে শুরু করে দেয়,
নীল: সরি বউ, আমি তোমার গায়ে হাত তুলতে চাই নি, কিন্তুু তুমি ইচ্ছে করে মার টা খেলে, আমি তোমাকে কি করে বোঝাই তোমাকে আমি কতটা ভালোবাসি, তোমাকে ছাড়া আমি থাকতে পারবো না, আর তুমি ভালো তো আমায় বাসোই না, আরো কি ভাবে কষ্ট দিবে সেটা খুজে বেড়াও,
টিপ: আসলে, ভুল টা আমার ই হয়েছে,, আমি তো শুধু বাচ্চাটাকে বাচাতে গিয়েছিলাম,
নীল: তোমার যদি কিছু হয়ে যেতো আমার কি হতো? একবার ভেবেছো? এখন থেকে যাই করতে যাও প্লিজ আমার কথা টা একটু ভেবো, প্লিজ নীলপরী, এবার তো কান্না থামাও আর কোনোদিন তোমার গায়ে হাত তুলবোনা, কথা দিলাম,
টিপ: নিন খেয়ে নিন,
নীল: আগে তুমি খাও, টিপ আগে খাবার খেয়ে নীলকে খাইয়ে দেয়, টিপ সব গুছিয়ে আবার গিয়ে বেলকুনিতে দাড়ায়, আর নীল গিয়ে টিপের পিছে দাড়িয়ে টিপের পেটে হাত দিয়ে টিপকে টেনে নিজের বুকের সাথে টেনে নেয়,
নীল: কি দেখছো ছোট্ট পরী,
টিপ: আমার একটা অতীত আছে নীল,
নীল: তো?
টিপ: সেটা জানলে হয়তো আপনি আমাকে,
নীল: আমি তোমাকে ভালোবাসি, আর ভালোবেসে যাবো, তোমার অতীতে যেটাই ঘটে যাক সেটা নিয়ে আমার কোনো মাথা ব্যাথা নাই। কারন যা হয়েছে আমি তোমার লাইফ এ না আসতে, এখন তোমার লাইফে আমি আছি, শুধুই আমি,
টিপ: সেই অতীতটা যদি এখন সামনে এসে দাড়ায় তখনও কি আপনি,
নীল: শোনো ছোট্ট পরী, আমি জানিনা তোমার অতীতে কে ছিলো, বা কি হয়েছিলো, আর আমার জানার কোনো ইচ্ছাও নাই, কিন্তুু এখন তোমার মনে কি আছে সেটা ই আমার জানতে হবে, আমি জানি তুমি আমায় ভালোবাসো,
কিন্তুু তার পরেও তুমি যদি তোমার অতীত কে আকড়ে ধরতে চাও তবে,
টিপ: তবে?
নীল: তোমার সুখের জন্য আমি সব করতে পারি টিপ, বলেই দেখো, ভালোবাসি তোমাকে টিপ,
কথাটা বলেই নীল টিপকে ছেরে রুমের মধ্যে চলে আসে, নীল রুমে এসে বিছানায় উঠতে যাবে ঠিক তখনই টিপ নীলের কাঁধে হাত দিয়ে সামনে ঘুরিয়ে নীলের টিশার্টের কলার টেনে নীলের ঠোটে কিস করতে শুরু করে দেয়, এটার জন্য নীল মোটেও প্রস্তুত ছিলো না, নীল চুপটি করে দাড়িয়ে আছে, আর টিপ পাগলের মতো নীলকে কিস করছেই, টিপ নীলের হাত দুটো টেনে নিজের কমরে জড়ীয়ে দিয়ে নীলের গলা জড়ীয়ে ধরে, নীল আর নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারে না, টিপের কমর ধরে টিপকে উচু করে নিজের বুকের সাথে জড়ীয়ে ধরে টিপকে রেসপন্স করতে শুরু করে, ঠিক তখনই নীলের ফোন টা বেজে ওঠে, টিপ নীলের ঠোট টা ছেরে দেয়,
নীল: কি হলো?
টিপ: আপনার ফোন বাজছে,
নীল : বাজুক, তুমি আমার কাছে এসো, কথাটা বলেই নীল টিপের ঘাড়ে মুখ গুজে দিয়ে ভালোবাসার পরশ দিতে থাকে, টিপ নীলের থেকে একটু দুরে চলে যায়,
টিপ: জরুরি ফোন হতে পারে, আগে ফোন টা ধরেন,
নীল: ধ্যাত ( ফোনটা হাতে নিয়ে) এই বুড়ি বাসায় থাকতেও জ্বালিয়েছে আবার বাসায় না থেকেও, কি ভাগ্য আমার, বউকে আদর করতে নিলেই উনি ব্যাঘড়া দিবে, টিপ এতে বেশ লজ্জা পেয়ে যায়, ওখান থেকে চলে আসতে নিলে নীল পিছে থেকে টেনে টিপকে টেনে টিপের পেটে হাত দিয়ে টিপকে জড়ীয়ে ধরে টিপের ঘাড়ে চুমু দিতে দিতে ফোনটা রিসিভ করে,
নীল: হ্যা মহারানী বলেন,
দাদী: কি রে দাদুভাই কেমন আছিস?
নীল: ভালো আর থাকি কি করে বলো, তুমি ভালো থাকতে দিচ্ছো কোথায়, আমার রোম্যান্স এর বারোটা বাজিয়ে দিচ্ছো,
দাদি: আমি কি করে কি করলাম?
নীল: কি করোনি তাই বলো? বউকে যখনই আদর করতে শুরু করি তখনি তুমি খল নায়িকার মতো মাঝ খানে এসে ব্যাঘড়া দাও, একটু আদর ও,
টিপ : হচ্ছে টা কি? দাদি কি মনে করবে হ্যা? ছাড়েন আমায়,
নীল: হুহ্ ছোট্ট পরী চুপ থাকো, কিস মি, জানু,
দাদি: দাদুভাই, আমায় একটু সম্মান করিস,
নীল: হুম, জানু, কি বলবে জলদি বলো তো,
দাদি: সামনের মাসে তোর বাবা আসছে,
নীল: তো?
দাদি: ও তোকে ফোন দিতে বলেছে,
নীল: আজব দুনিয়া তোমার ছেলে কি আমায় ফোন দিতে পারে না? তোমায় দিয়ে বলিয়ে কি পিতার দ্বায়িত্ব পালন করছে? শোনো দাদি তোমার ছেলে দেশে আসছে, উনার বাড়ি আছে উঠবে, আমার তো কোনো প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না, প্লিজ তোমায় রিকুয়েস্ট করছি আমাকে আমার মতো থাকতে দাও, আমি জানি তোমার ছেলে আমায় ফোন দিতে বলে নি ,মিথ্যা বলে ভেবোনা আমি সবব ভুলে যাবো,
দাদি: দাদুভাই,
নীল ফোন টা কেটে বিছানায ফেলে দিয়ে টিপকে ছেড়ে দিয়ে বেলকুনিতে এসে দাড়ায়, টিপ পিছে পিছে আসে,
টিপ তাকিয়ে দেখে নীল চুপ করে নীরবে চোখের পানি ফেলছে,
টিপ: (আমাকে বুকে আগলে রেখেছো, কোনো কষ্ট পেতে দিতে চাওনা, আর তুমি এতো কষ্ট বুকের মধ্যে চেপে রেখেছো, ছেলেরা যে এভাবে কাদতে পারে আমার জানা ছিলো না, তোমাকে বোঝার মতো ক্ষমতা আমার হয়নি)
টিপ: নীলকে ডাকে নীল মুখ তুলে তাকিয়ে দেখে টিপ দাড়িয়ে আছে, সবচেয়ে অবাক করা কথা হলো টিপ আজ নীলের নাম ধরে ডেকেছে, নীল টিপের দিকে তাকিয়ে আছে, টিপ এক পায়ে দুপায়ে নীলের কাছে গেলো, নীলের মুখোমুখি দাড়ায়,
টিপ: আইসক্রিম খাবো, এই রকম সিচুইয়েশনে টিপের এ কথা শোনার সাথে সাথেই নীল হাহাহাহাহ্ করে হেসে ওঠে, টিপ ও হেসে ওঠে, কারন টিপ চেয়েছিলো নীলের মন ভালো করতে,
নীল: চলো,
টিপ : আইসক্রিম চাইনা,
নীল: তাহলে?
টিপ: চলেন ঘুমাবো,
নীল: কেনো আমায় ছাড়া,
টিপ: হুম, আর কিছু বললে আজকেও এখানে ঘুমাবো,
নীল: ঘুমাইতে দিচ্ছি তোমায় এখানে দাড়াও, কথাটা বলেই নীল টিপকে কোলে তুলে নেয়,
টিপ: হচ্ছে টা কি?
নীল: ভয় পেয়োনা জান এমন কিছু করবোনা যাতে তোমার সম্মান নষ্ট হবে,
টিপ: হবে না,
নীল: কেনো?
টিপ: হাজবেন্ড তো আপনি আ……
নীল: হ্যা হ্যা শেষ করো কথা, আমি তোমার হাজবেন্ড, আমি যা ইচ্ছা করতে পারি তাই না?
টিপ: লজ্জায় মথা নিচু করে নেয়,
নীল মুখটা টিপের মুখের কাছে নিয়ে এসে ফিসফিসিয়ে বলে,
নীল: যেদিন নিজে যেচে এসে আমায় হাজবেন্ডের অধিকার দিতে চাইবে সেদিন আমি তোমার ওপর অধিকার খাটিয়ে নিবো, তার আগে নয়, বুঝলে ছোট্ট পাখি তাই অঝথা ভয় পাবার কারন নাই, নীল এসে বিছানায় টিপকে শুইয়ে দিয়ে কাথা মুড়ি দিয়ে টিপের কোলে ঘুমিয়ে পড়ে, সকালে টিপ অফিসে বের হবে সেই সময় টিপের ফুপি ফোন দেয়,
টিপ: হ্যা ফুপি,
ফুপি: কি ভেবেছিস আমি বাসায় নাই আর তুই বিয়ে করে আমার থেকে পার পেয়ে যাবি?
টিপ: না ফুপি আসলে,
ফুপি: আমার টাকা লাগবে,
টিপ আমি এখন টাকা কোথায় পাবো?
ফুপি: তোর তো মাস পুরে গেছে বেতন পাস নি?
টিপ: তোমার জামাই এর কাছে বেতন চাইবো কি করে?
ফুপি: জানিনা, পারলে রক্ত বেচে দে কিন্তু আমার আজ ৫০০০০ টাকা চাই, না হলে কিন্তুু তোর সংসার ভাঙতে সময় লাগবে না,
টিপ: তোমার টাকা তুমি পেয়ে যাবে কিন্তুু এই কথা গুলো তোমার জামাই যেনো না জানতে পারে,
ফুপি: আমার শুধু টাকা চাই, টিপ ফোনটা কেটে অফিসে চলে যায়, টিপ কি করে বলবে টাকার কথা, যাই হয়ে যাক নীলকে ও কষ্ট দিতে পারবে না, আসিফকে কখনই নীলের সামনে আসতে দিবে না, তার জন্য টিপ ওর ফুপিকে টাকা দিবে, টিপ অফিসে এসে ডেস্ক এ বসার সাথে সাথেই ওয়ার্ড বয় এসে টিপকে একটা প্যাকেট ধরিয়ে দেয়,
টিপ: এটা কি?
ওয়ার্ডবয়: বড় স্যার আপনাকে দিতে বলেছে, আপনার স্যালারি,
টিপ: ধন্যবাদ,
টিপ প্যাকেট টা খুলে দেখলো বেতন থেকে অনেক টাকা বেশি, টিপ প্যাকেট টা নিয়ে নীলের কেবিনে যায়,
টিপ: স্যার আসবো?
নীল: আসেন ম্যাম,
টিপ : আমার স্যালারি কত?
নীল: তোমার স্যালারি আমি, কি নিতে পারবে আমায়?
টিপ: ফাজলামু করবেন না, আমি জানি আমার স্যালারি কত, বাকি টাকা গুলি নিন,
নীল: আমার যা আছে সব তোমার, তোমায় আর কি দিবো বলো, যখন যা লাগবে,
টিপ: টাকার ওপর আমার কোনো লোভ নাই, আর আপনি আছেন তো আমার চাহিদা পুরন করার জন্য,
নীল টিপের দিকে তাকালো, টিপ একটা মুচকি হাসি দিয়ে কেবিন থেকে বের হয়ে আসে,
আসিফ: টিপ বেবি,
টিপ লাফিয়ে ওঠে, পিছে তাকিয়ে দেখে আসিফ দাড়িয়ে আছে,
টিপ: আপনি?
আসিফ: তোমাকে আজ খুব সুন্দর লাগছে,
টিপ: তো?
আসিফ: আজ সন্ধ্যায় দেখা করতে আসো,
টিপ: দেখা, কার সাথে?
আসিফ: আমার সাথে,
টিপ: আমি একবার একটা ভুল করেছি জন্য বার বার সেই ভুলের রিপিট করবো ভাবলেন কি করে হ্যা?
আসিফ: ৬ টায়, সেই কফিশপে, যেখানে আগে রোজ মিট করতাম,
টিপ: আপনি কানে শুনতে পান না?
আসিফ: আমাদের ডুয়েট পিক গুলা আমার কাছে এখনও আছে টিপ,
টিপ: পি পি পিক?
আসিফ: ৬ টায় চলে এসো,
টিপ গিয়ে ধুপ করে ডেস্ক এ বসে পড়ে, কি করবে ও কিছুই বুঝতে পারছে না, একদিকে ওর ফুপি অন্য দিকে আসিফ, এভাবে কি করে ও নীলের থেকে গোপন রাখবে সব কিছু, ভাবতে ভাবতেই সারাদিন চলে গেলো, অফিস ছুটির পরে টিপ নীলের কাছ থেকে পারমিশন নিয়ে ও বাড়িতে যায় তিশার সাথে দেখা করবে বলে,
ফুপি: আয় মা,
টিপ: থাক ফুপি আর আদিক্ষেতা করো না, আচ্ছা ফুপি বাবা বেচে থাকতে তো তোমার সাথে এমন কিছু খারাপ করেনি যার প্রতিশোধ তুমি এভাবে নিচ্ছো, আমি তো তোমার মেয়ের মতো, আমায় কেনো এভাবে শাস্তি দিচ্ছো,
ফুপি: টাকাটা, টিপ আর কিছু না বলে টাকা গুলা দিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে আসে, নিজের গলার চেইন বিক্রি করা টাকা আর স্যালারির টাকা দিয়ে ফুপির কথামতো টাকা দিয়ে আসে, ও নীলকে হারাতে চায় না, নীলকে আকড়ে ধরে বাচতে চায়, সন্ধ্যার পরে নীল বাসায় ফেরার পথে কালকে টিপের আইসক্রিম খাবাে কথা মনে পড়ে যায়, নীল একগাল হেসে একটা রেস্টুরেন্ট এর সামনে গাড়ি দাড় করায়, আর গাড়ি থেকে নেমে পাশের কফিশপে টিপকে আর আসিফকে একসাথে দেখে নীলের পা থমকে যায়, বিশ্বাস করতে পারে না ও টিপকে দেখছে, নীল টিপের কাছে ফোন দেয়,
নীল: আমি আসবো এখন নিতে?
টিপ: না তোমার আসতে হবে না, আমি আর তিশা একসাথেই আছি, ও আমায় বাসায় রেখে যাবে, নীল কিছু না বলেই ফোনটা কেটে দেয়
চলবে………………..
Leave a Reply