মো:ফুজায়েল আহমদঃ বাংলাদেশ যেন বিশ্বের তালিকায় সর্বচ্চ স্থান পায়, সে লক্ষে প্রধানমন্ত্রী অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। ২০২০ সালের মধ্যে খুব বড় ধরনের দুটি দূর্যুগ করোনা এবং বন্যা। এ দূর্যুগ সময়ে মানুষের ঘরে ঘরে খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা বহাল রেখেছেন। যাতেকরে মানুষ কষ্ট না পায়। সুখে শান্তিতে বসবাস করতে পারে।
দেশনেত্রী শেখ হাসিনার এ লক্ষ্য চলমান রয়েছে এবং থাকবে। গোটা বিশ্বের দৃষ্টি এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকে। শেখ হাসিনার বিচরণ এখন আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে। শেখ হাসিনা কোন দিকে তাকাচ্ছে, আমেরিকা-রাশিয়া, ভারত-পাকিস্তানসহ চীন ও অন্যান্য দেশ সেটা লক্ষ্য করছে। সব পরাশক্তি শেখ হাসিনার দৃষ্টির দিকে তাকিয়ে আছে, শেখ হাসিনা কোন দিকে তাকায়। এরকম একজন নেতৃত্ব আমরা পেয়েছি, সেটা বাংলাদেশের জনগণের সত্যিই সৌভাগ্য। শেখ হাসিনা আছেন বলেই বাংলাদেশের জনগণ নিরাপদ। আমরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছি। করোনার সময় যখন গোটা বিশ্ব অমানিশার অন্ধকারে নিমজ্জিত, তখন শেখ হাসিনা সাহসিকতার সঙ্গে লড়াই করছেন। জাস্টিন ট্রুডোর (কানাডার প্রধানমন্ত্রী) চোখের পানি আমরা দেখেছি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করছেন। স্বাস্থ্যখাত নিয়ে যারা গর্ব করে সেই ইতালির প্রধানমন্ত্রী আকাশের দিকে তাকিয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করেছে। কিন্তু শেখ হাসিনা একদিনের জন্য, এক মুহূর্তের জন্যও সাহস হারাননি। তিনি লড়ে যাচ্ছেন সীমিত সম্পদ নিয়ে। বাংলাদেশের জনগণকে তিনি লড়াই করতে শিখিয়েছেন। যদি এমন নেতৃত্ব না পেতাম, তাহলে কী হত। ১৯৯১ সালের ঘুর্নিঝড় দুই লাখ মানুষ মারা গেছে। পশু-প্রাণী এবং মানুষকে একসঙ্গে দাফন করতে হয়েছে। এরকম অবস্থা বাংলাদেশে হয়েছিল। তখন কে রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিল আপনারা জানেন। বৈশ্বিক মহামারী করোনার কারণে বিপর্যস্ত বিশ্ব। যার প্রভাব এড়াতে পারেনি বাংলাদেশও। গত ছয় মাস ধরে অদৃশ্য এ শক্তির মোকাবিলার পাশাপাশি ছিল প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। এখন চলছে বন্যা। এসব প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে মানুষকে বাঁচাতে বহুমাত্রিক উদ্যোগ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কর্মঘণ্টা ভুলে শক্ত হাতে একাই সামলে নিচ্ছেন সবকিছু। বাংলাদেশ স্বপ্ন দেখছে সামনে এগিয়ে যাওয়ার। করোনার মধ্যেও থেমে নেই মেগা প্রকল্পগুলোর নির্মাণ। দেশের আর্থিক সক্ষমতা বাড়ছে। অর্থনীতির প্রধান সূচকগুলোর মধ্যে আমদানি, রপ্তানি ও রেমিট্যান্স আগের চেয়ে শক্তিশালী হয়ে ওঠায় অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষের বার্ষিক মাথাপিছু গড় আয় ২ হাজার ডলার ছাড়িয়ে গেছে। আগের অর্থবছরে যা ছিল ১ হাজার ৯০৯ ডলার। অর্থাৎ দেশের মানুষের মাথাপিছু গড় আয় এক বছরের ব্যবধানে ১৫৫ ডলার বেড়েছে। করোনা সংকটকালে বাজার পরিস্থিতিও ছিল সাধারণ মানুষের নিয়ন্ত্রণে। অর্থাৎ করোনা, আম্ফান, বন্যা ও বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সফলভাবে সংকট মোকাবিলা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সূত্রমতে, মার্চে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর প্রথমে স্কুল, কলেজ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। এরপর ২৮ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। টানা দুই মাসের ওপর (৬৬ দিন) ছুটিতে গৃহবন্দী হতে হয় মানুষকে। কর্মহীন অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তাঁর আহ্বানে সাড়া দিয়ে এগিয়ে আসেন আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী এবং দেশের অনেক শিল্পগ্রুপ। করোনা সংকটে যেসব মানুষ চক্ষুলজ্জার ভয়ে অন্যের কাছে হাত পাততে পারেনি, তাদের তালিকা করে ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। করোনা মহামারীতে যখন মানুষ দিশাহারা তখনই মে মাসে হানা দেয় প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। প্রথম দিকে ধারণা করা হচ্ছিল, বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হবে। গৃহহীন হবে অনেক মানুষ। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে নিশ্চিত হয় উপকূলের লাখো মানুষের নিরাপত্তা। আগাম প্রস্তুতি গ্রহণ করায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা হয়। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে ঘরবাড়ি করে দেওয়াসহ খাদ্যসামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম এখনো চলমান।
করোনায় লকডাউনের কারণে শ্রমিক সংকটে কৃষক যখন ঘরে ধান তুলতে পারছিল না, তখন শ্রমিকদের বিভিন্ন জায়গায় চলাচলের জন্য ব্যবস্থা নিতে মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, কৃষক লীগসহ দলের সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের ধান কেটে ঘরে তুলে দিতে নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী। তাঁর নির্দেশে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিনামূল্যে কৃষকের ধান কেটে ঘরে তুলে দেন। ফলে বন্যায় ডুবে যাওয়া কিংবা শ্রমিক সংকট থেকেও সাফল্য আসে। সে সময় ধান ও চাল সংগ্রহ করতে মাঠ পর্যায়ে নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফলে খাদ্য মজুদ করা হয় দেশে। বাড়ির পাশে খালি জায়গায় কৃষি আবাদের নির্দেশনা দেন সরকারপ্রধান।
করোনা চলাকালে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে ১৯টি প্যাকেজে ১ লাখ ৩ হাজার ১১৭ কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা দেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। এতে বড়, মাঝারি ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা যেমন প্রণোদনা পেয়েছেন, বাদ যাননি করোনাযোদ্ধা চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্টরাও। তাদের জন্যও ঘোষণা করা হয় স্বাস্থ্যবীমা বা প্রণোদনা। করোনায় স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে নিয়োগ দেওয়া হয় চিকিৎসক। নিশ্চিত করা হয় চিকিৎসা সুরক্ষাসামগ্রীও। সবকিছু শক্ত হাতে তদারকি করেন তিনি।
দরিদ্র কৃষক ও কৃষির উৎপাদন বাড়াতে ৫ হাজার কোটি টাকা ঘোষণা দেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। এতে বাদ পড়েননি মসজিদের ইমাম, খতিব, মুয়াজ্জিন, মাদ্রাসার শিক্ষক, নন-এমপিও শিক্ষক, গার্মেন্ট শ্রমিক, গ্রামপুলিশ, প্রতিবন্ধী, দুস্থ সাংবাদিকরাও। এমনকি তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের কথাও ভুলে যাননি সরকারপ্রধান। তাদেরও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রদানের জন্যও বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২৫ কোটি টাকা। ঈদের আগে প্রতি পরিবারকে ২ হাজার ৫০০ করে ১ হাজার ২৫০ কোটি নগদ টাকা সহায়তা করা হয়েছে। দরিদ্র মানুষের জন্য বরাদ্দ বাড়ানো হয় ভিজিএফ, ভিজিডির পরিমাণ। রেশন কার্ডের আওতায় ১০ টাকা দরে চাল বিক্রি করা হয়। এতে ৫ কোটি মানুষ উপকৃত হয়েছে। শিশুদের জন্যও খাদ্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ত্রাণ বিতরণ ক্ষমতাসীন দলের কিছু কিছু জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠলেও কাউকে এক চুল ছাড় দেননি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শতাধিক জনপ্রতিনিধিকে বরখাস্ত করাসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অনেকেই ধারণা করেছিলেন, করোনাকালে দেশে খাদ্য সংকট দেখা দেবে, কিন্তু শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বের কারণে কোনো সংকট সৃষ্টি হয়নি। বরং উৎপাদন ও খাদ্য মজুদ বেড়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবন সূত্রগুলো বলছেন, করোনা পরিস্থিতির পর থেকেই কর্মঘণ্টা ভুলে দেশের মানুষকে বাঁচানোর লড়াইয়ে নিরলস কাজ করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনার শুরু থেকে গণভবন থেকে ছয় দফায় তৃণমূলে মাঠ প্রশাসন, জনপ্রতিনিধির সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেছেন শেখ হাসিনা। মানুষের জীবন ও জীবিকা সচল রাখতে দিয়েছেন সব ধরনের নির্দেশনা। স্বাস্থ্য খাতের অব্যবস্থাপনাসহ সব জায়গায় সঠিক মনিটরিং করেছেন তিনি। এ ছাড়া এখন নিয়মিত মন্ত্রিসভার বৈঠকসহ নানা কর্মসূচিতে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী।
জুনের শেষ সপ্তাহে দেশের কয়েকটি জেলায় আঘাত হানে ভয়াবহ বন্যা। বন্যা ও নদী ভাঙন রোধেও নজর দেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। সংশ্লিষ্ট জেলার প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, দলীয় নেতা-কর্মীদের বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে নির্দেশনা দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ত্রাণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। যারা আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন তাদেরও পুনর্বাসনে প্রস্তুতি চলছে।
করোনা, আম্ফান ও বন্যার মধ্যেও সরকারের দক্ষ মনিটরিংয়ের কারণে বাজার পরিস্থিতিও ছিল সাধারণ মানুষের নাগালে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই মজুদদারদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। বিভিন্ন সংস্থাও নিয়মিত মনিটরিং করেছে সর্বক্ষণ।
এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। শুধু করোনা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলাই নয়, ঘূর্ণিঝড় আম্ফান, বন্যা পরিস্থিতি শক্ত হাতে মোকাবিলা করছেন। আবার অর্থনীতির চাকাও সচল রেখেছেন। গণভবন থেকে সবকিছু কঠোরভাবে মনিটরিং করছেন। কিছু দোষত্রুটি ও অন্যায় হলে সেখানেও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন তিনি। এমনকি দলীয় পরিচয়েও কেউ পার পাচ্ছে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘শুধু করোনা, আম্ফান, বন্যাই নয়, এবারের ঈদযাত্রাও আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ ছিল। সেটাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সাফল্যজনকভাবে মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছি। এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় বিশ্বের বড় বড় দেশ যখন হিমশিম খাচ্ছে তখন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের সব অর্থনীতির সূচক বৃদ্ধি পেয়েছে। ঘুরে দাঁড়াচ্ছে দেশের অর্থনীতি। মহামারীকালে স্বাস্থ্য বিভাগের ভেতর ঘাপটি মেরে থাকা দুর্নীতিবাজ চক্রের বিরুদ্ধে ‘অল আউট অ্যাকশন’ শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদের পদত্যাগ তারই বহিঃপ্রকাশ। স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি বন্ধে শিগগিরই আরও কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন তিনি। এ ছাড়া পুরো স্বাস্থ্য খাতকে ঢেলে সাজানোরও উদ্যোগ নিয়েছেন। স্বাস্থ্য বিভাগে দীর্ঘদিন ধরে তৎপর দুর্নীতিবাজচক্রকে নির্মূলেও সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে ইতোমধ্যে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন। খবর সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রের।
সূত্র জানায়, করোনা মহামারীকালে স্বাস্থ্য খাতের পুরনো দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেট নতুন করে সক্রিয় হয়ে ওঠে। তারা মাস্কসহ স্বাস্থ্য বিভাগের বিভিন্ন কেনাকাটায় নজিরবিহীন দুর্নীতি করেন। এই সিন্ডিকেটে যুক্ত হন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের (সিএমএসডি) এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা। এ ছাড়াও বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের কেনাকাটায় দুর্নীতিবাজচক্র ভর করতে থাকে। এ নিয়ে গণমাধ্যমে একের পর এক খবর প্রকাশ হয়। প্রথমেই সামনে চলে আসে এন৯৫ মাস্ক কেনাকাটায় দুর্নীতির কেলেঙ্কারির দিকটি। এ নিয়ে আলোচনার মধ্যেই গত ২২ মে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সিএমএসডি পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শহিদ উল্লাহকে বদলি করে। তার এই বদলিতেও হাত ছিল স্বাস্থ্যের দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেটের। এর পরই ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শহিদ উল্লাহ স্বাস্থ্য খাতে দীর্ঘদিন ঘাপটি মেরে থাকা মিঠু সিন্ডিকেটের বিষয়ে হাটে হাঁড়ি ভেঙে দেন। তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেটের নানা দুর্নীতির তথ্য সংযুক্ত করে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী, জনপ্রশাসন সচিব এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে লিখিত একটি চিঠি জমা দেন। তার এই চিঠির বিষয়বস্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গোচরীভূত হলে তিনি দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেটকে ধরতে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট অন্য সংস্থাকে নির্দেশনা দেন। এর পর জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে সরিয়ে দেওয়া হয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলামকে। সেখানে নতুন সচিব নিয়োগ করা হয় মো. আব্দুল মান্নানকে। এ ছাড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রভাবশালী দুই অতিরিক্ত সচিবকেও সরিয়ে দেওয়া হয়, যারা স্বাস্থ্য বিভাগের দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেটের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছিলেন। এর পর থেকেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদকে সরিয়ে দেওয়ার বিষয়টি আলোচনায় জোর পায়।
সূত্র বলেছে, গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক যে পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন, তা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই করতে হয়েছে। কদিন আগেই তাকে পদত্যাগ করতে বলা হয়েছিল সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে। তিনি পদত্যাগ না করে নানা ঘাটে তদবির করে বেড়াচ্ছিলেন নিজেকে রক্ষার জন্য; কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী সিদ্ধান্তের কারণে শেষমেশ আবুল কালাম আজাদ পদত্যাগে বাধ্য হন। পদত্যাগ না করলে কী পরিণতি ভোগ করতে হবে, সে বিষয়টিও জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদকে। যে কারণে গতকাল তিনি পদত্যাগে বাধ্য হন।
সূত্র বলেছে, স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতির ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের চলমান অ্যাকশন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশেই হয়েছে। এ ছাড়া করোনা রিপোর্ট জালিয়াতিকা-ে জেকেজি হেলথ কেয়ার ও রিজেন্ট হাসপাতালের সাহেদ করিমসহ তাদের অন্য সহযোগীদের বিরুদ্ধে র্যাবের অভিযানও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে চলমান।
Leave a Reply