পি টিভি নিউজ ॥ দাতাদের বেঁধে দেয়া শর্ত অন্যদিকে ক্রয় নীতিতে সর্বোচ্চসংখ্যক উৎপাদনকারীকে অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়াতেই নিম্ন্নমানের যন্ত্রাংশ ঢুকে পড়ছে বিদ্যুত উপকেন্দ্রে। ফলে ঘটছে বড় দুর্ঘটনা। বিদ্যুত বিভাগের তদন্তেও বিষয়টি ধরা পড়েছে। কোন কোন কোম্পানিকে কালো তালিকাভুক্তও করা হয়েছে। তবে এর থেকে বেরিয়ে আসার কোন পন্থা এখনও ঠিক করা সম্ভব হয়নি। এজন্য সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশনা জরুরী বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
কোন বিদ্যুত উপকেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ডের মোটাদাগে পাঁচটি কারণ চিহ্নিত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এরমধ্যে প্রথমটি নক্সায় ভুল থাকা। কোন উপকেন্দ্রে নক্সায় ভুল থাকলে সঙ্গে সঙ্গেই সেখানে আগুন লেগে যায় না। তবে দীর্ঘমেয়াদে এটি কোন না কোন সময়ে অগ্নিঝুঁকি তৈরি করে। দ্বিতীয়টি হচ্ছে উপকেন্দ্রের ব্রেকার থেকে স্পার্ক করে আগুন লেগে যেতে পারে। উপকেন্দ্রের ভোল্টেজ লেভেল ঠিকমতো মেনে না চললে ব্রেকারে স্পার্ক বা অগ্নিস্ফূলিঙ্গের সৃষ্টি হয়। কোন না কোন সময়ে সেখান আগুন লেগে যেতে পারে। তৃতীয়ত উপকেন্দ্রে নিম্ন্নমানের যন্ত্রাংশ লাগালে। কোন না কোন সময় এ ধরনের যন্ত্রাংশ বিস্ফোরিত হয়ে আগুন লেগে যেতে পারে। চতুর্থটি হচ্ছে নিয়মিত সংরক্ষণের অভাব। প্রত্যেকটি উৎপাদনকারী তার যন্ত্রটি সংরক্ষণের জন্য দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক এবং বছরভিত্তিক একটি সিডিউল করে দেয়। এই সিডিউল ধরে যদি সংরক্ষণ না করা হয় তাহলেও অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি সৃষ্টি হয়। এই সিডিউল সংরক্ষণের জন্য অর্থ এবং সময়ও বরাদ্দ থাকে। তবে এখানে কর্মকর্তাদের গাফিলতি রয়েছে বলে মনে করা হয়। পাঁচ নাম্বার কারণটি হচ্ছে পরিচালনায় অদক্ষতা। কোন কারণে যদি পরিচালনায় কোন ত্রুটি হয় তাহলেও সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
সাম্প্রতিক সময়ে কেরানীগঞ্জ, শিকলবাহা এবং পাবনা বিদ্যুত উপকেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এই তিনটি উপকেন্দ্রের অগ্নিকাণ্ডে তদন্ত কমিটিতে ছিলেন এমন একজন কর্মকর্তা জানান, আমরা নিম্নমানের যন্ত্রাংশ সংযোজনের প্রমাণ পেয়েছি। বিষয়টি আমাদের রিপোর্টেও উল্লেখ করেছি। মন্ত্রণালয়কেও জানানো হয়েছে। তিনি মোটা দাগে দুটি কারণ উল্লেখ করেছেন পিজিসিবির কিছু কর্মকর্তা হয়ত কোন কোন কোম্পানিকে বিশেষ সুবিধা দিতে এমনভাবে দরপত্র তৈরি করে দিচ্ছে যাতে নিম্ন্নমানের কোম্পানি দরপত্রে অংশগ্রহণ করতে পারে। বর্তমানে এই কর্মকর্তা একটি বিদ্যুত বিতরণ কোম্পানির প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বলেন, আবার যেসব কর্মকর্তারা প্রিইন্সপেকশন বা যন্ত্রাংশের নির্মাণ তদারকি করতে গেছেন, তারাও যথেষ্ট দক্ষ নয়। এজন্য আমাদের কাছ থেকে টাকা নিলেও আমরা সঠিক যন্ত্রাংশ নিয়ে আসতে পারিনি। এই ব্যর্থতা ওইসব কর্মকর্তাদের।
পিজিসিবির ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইয়াকুব এলাহী চৌধুরীর কাছে এই অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে বলেন, আমরা ক্রয়ের ক্ষেত্রে সরকারী ক্রয় নীতি (পিপিআর) অনুসরণ করি। পিজিসিবি তার প্রায় সব কাজই দাতাদের অর্থায়নে করে থাকে তাই তাদের (দাতাদের) নিজস্ব ক্রয় নীতিরও আমরা বাইরে যেতে পারি না।
Leave a Reply